• E-paper
  • English Version
  • বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১৩ অপরাহ্ন

×

লাখো মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসে সাইবার নিরাপত্তা হুমকিতে

  • প্রকাশিত সময় : রবিবার, ৯ জুলাই, ২০২৩
  • ৯৯ পড়েছেন

তথ্যপ্রযুক্তিতে হ্যাকিং একটি পরিচিত বিষয়। দেশের সরকার, কোনো সংস্থা বা ব্যক্তিবিশেষের ওয়েবসাইট হ্যাক করে তথ্য হাতিয়ে নেয় হ্যাকাররা। তারপর সেই তথ্য দিয়ে প্রতারণা করে বা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ লোপাট করে। অনেকসময় হ্যাকারদের দিয়ে গোয়েন্দা তথ্য, বিজ্ঞান-প্রযুক্তির সর্বশেষ গবেষণার তথ্য হাতিয়ে নেয় প্রতিদ্বন্দ্বী দেশও। হ্যাকিং একটি বেআইনি ও অবৈধ কাজ। কিন্তু এটি হয়ে এসেছে শুরু থেকেই। হ্যাকিং পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি। তবে সব দেশই এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক। তারা হ্যাকারদের বিরুদ্ধে যেমন তৎপর তেমনি হ্যাকিং বন্ধে প্রযুক্তির উন্নয়নেও সর্বোচ্চ প্রয়াস নিয়োগ করে।
বাংলাদেশে প্রায়ই বিভিন্ন সরকারি সংস্থার ওয়েবসাইট হ্যাক হওয়ার খবর পাওয়া যায়। কিছু দিন আগে বাংলাদেশ বিমানের ওয়েবসাইট হ্যাক হয়। রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির অনেক তথ্য শুধু ফাঁস হয়েছে এমন নয়, গণমাধ্যমের খবরে জানা যাচ্ছে, ওই সব তথ্য এখনো অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে সহজেই। এ দেশে সাইবার অপরাধের সবচেয়ে বড় ঘটনা ঘটে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ লুটের ঘটনায়। বিদেশে বসে অপরাধীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ সরিয়ে নেয় নিপুণ দক্ষতায়। সেই ঘটনা দেশে আলোড়ন সৃষ্টি করে। কিন্তু সাইবার সুরক্ষার অভেদ্য কোনো ব্যবস্থা বাংলাদেশ গড়তে পারেনি। কারণ পরেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ লুটের ঘটনায় একজন গভর্নরের চাকরি গেছে। কারো কারো শাস্তি হয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে যেসব তদন্ত হয়েছে একটিরও রিপোর্ট জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি। জনগণ জানে না, কারা ওই ঘটনার সাথে জড়িত ছিল।
সাইবার অপরাধ বা তথ্য চুরির সর্বশেষ ঘটনা ঘটেছে গত জুন মাসে। এবার সরকারি একটি ওয়েবসাইট থেকে ফাঁস হয়েছে লাখ লাখ মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য। ব্যক্তির নাম, ফোন নম্বর, ইমেল ঠিকানা ও জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বরসহ ব্যক্তিগত নানা তথ্য ফাঁস হয়ে গেছে। ঘটনাটি জানা যায় গত ৮ জুলাই গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে।
দক্ষিণ আফ্রিকাভিত্তিক আন্তর্জাতিক সাইবার নিরাপত্তাবিষয়ক প্রতিষ্ঠান বিটক্র্যাক সাইবার সিকিউরিটির গবেষক ভিক্টর মার্কোপোলোস ঘটনাটি ফাঁস করেন। মার্কোপোলোস গত ২৭ জুন ফাঁস হওয়া তথ্যগুলো দেখতে পেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিমকে (বিজিডি ই-গভ সার্ট) জানান। পরে তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের অনলাইন সংবাদমাধ্যম টেকক্রাঞ্চ ১০টি বিভিন্ন উপায়ে বিষয়টি পরীক্ষা করে তথ্য ফাঁসের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
তথ্য ফাঁসের বিষয়ে জানতে বাংলাদেশের বিজিডি ই-গভ সার্ট, সরকারের তথ্য দফতর, ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস ও নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ কনসুলেটের সাথে যোগাযোগ করে কারো কাছ থেকে সাড়া পায়নি টেকক্রাঞ্চ।
নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হওয়া বিপজ্জনক। এসব তথ্য ব্যবহার করে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফাঁকা করে দেয়াই শুধু নয়, যে কাউকে জঙ্গিবাদের সাথেও জড়িয়ে দেয়া সম্ভব। সম্ভব পারিবারিক জীবন ধ্বংস করে দেয়া। ফলে লাখ লাখ বাংলাদেশীর জীবনে যে মারাত্মক দুর্গতি নেমে আসতে পারে, তা স্পষ্ট। আবার খোদ বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও সরকারের বিরুদ্ধেও ব্যবহার করা হতে পারে অনেক তথ্য। কিন্তু এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে তেমন কোনো উদ্যোগ নেই। বিজিডি ই-গভ সার্টের প্রকল্প পরিচালক একটি দৈনিককে জানান, তারা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন।
আর এ ঘটনায় রাষ্ট্রের বড় ক্ষতি হয়েছে জানিয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, সংশ্লিষ্ট দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়েছে। এটি কোনো কাজের কাজ নয়। মন্ত্রীর প্রথম কাজ ছিল প্রকাশিত তথ্যগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করা। অনলাইনে সেগুলো যাতে কেউ না পায় সেই ব্যবস্থা করা। জরুরি ছিল সরকারের সব প্রতিষ্ঠানের সাইবার নিরাপত্তা খতিয়ে দেখা এবং যেকোনো দুর্বলতা রোধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া। সেসব কিছুই করা হয়নি। বিষয়টি দুর্ভাগ্যজনক।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: BD IT SEBA